দৈনিক কালের কণ্ঠ শখের অভিনেতা
বাবা, অফিসার, পুলিশসহ বিভিন্ন চরিত্রে তাঁর দেখা মেলে। মাত্র দেড় বছরে প্রায় অর্ধশত নাটকে অভিনয় করেছেন। আজম খানকে নিয়ে লিখেছেন ইসমাত মুমু
টিভি নাটকে অভিনয় করছেন দেড় বছর হলো। শৈশবে কবিতা আবৃত্তি, বিতর্ক, মঞ্চনাটকের প্রতি ঝোঁক ছিল। কিন্তু পেশাটা সাজাতে হলো অন্যভাবে। ১৮ বছর ধরে ব্যাংকার। একটি বেসরকারি ব্যাংকের কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান। ১১ বছর কাজ করেছেন ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে। সেসব থেকে অভিনয়ে আসাটা বেশ কাকতালীয়ভাবে।
“ব্যাংকার হিসেবে বেশ কিছু টিভি টক শোতে অংশ নিয়েছিলাম। একদিন গল্পের ছলে এটিএন বাংলার চন্দন সিনহাকে বললাম, কখনো যদি সুযোগ আসে অভিনয় করতে চাই। সংলাপ থাকলে থাকল না থাকলে নাই, একটু মুখ দেখাতে পারলাম। তিনি খুব সিরিয়াসভাবে নিলেন কথাটা। কিছুদিন পর পরিচয় করিয়ে দিলেন নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরীর সঙ্গে। অন্যদিকে একই চ্যানেলের মীর মোতাহার হাসান ভাই পরিচয় করিয়ে দিলেন এফ কিউ পিটারের সঙ্গে। তিনিই প্রথম ‘দ্য হিরো’ নাটকে সুযোগ দিলেন”-বললেন আজম খান।
প্রথম দিনের শুটিংয়ে মাকে হারিয়েছেন। সে গল্প বলতে গিয়ে কিছুটা থেমে গেলেন, ‘মা দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। সেদিন সকালেও তাঁকে দেখে এসেছি। শুটিং স্পটে খবর পেলাম মা কোমায়। সেখান থেকে ফিরে আর মাকে পেলাম না। এটা আমার একটা কষ্টের স্মৃতি। আমি যে কাজ করেছি তা তিনি দেখে যেতে পারেননি।’ এখন পর্যন্ত ৪০টি একক নাটকে কাজ করেছেন। এ ছাড়া ধারাবাহিক করেছেন, মডেল হয়েছেন মিউজিক ভিডিওতেও। এর মধ্যে ৩০টি নাটকই চয়নিকা চৌধুরীর। “তাঁর সঙ্গে প্রথম নাটক ‘অনুমতি প্রার্থনা’। মাহফুজ আহমেদ ও শমী কায়সার অভিনয় করেছেন প্রধান চরিত্রে। এর পর গত বছর বেশ কিছু নাটক করেছি চয়নিকা চৌধুরীর পরিচালনায়।”
আজম খান অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘আমাদের বর্ষা’, ‘তালপাতার পাখা’, ‘শেষের পরে’, ‘সবুজ মানুষ’, ‘লাইফ ইন আ মেট্রো’। বাবার চরিত্রই করেছেন বেশি। এ ছাড়া শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, করপোরেট অফিসার, পুলিশ অফিসার, সিআইডি অফিসারের চরিত্রও করেছেন। ‘বাবা চরিত্রটাই বেশি টানে। ওখানে পার্সোনাল টাচটা থাকে। মাহফুজ আহমেদের পরিচালনায় ‘শৈনপ্রু’ নাটকে তিশার বাবা হয়েছিলাম। চরিত্রটা খুব ইন্টারেস্টিং লেগেছে। চয়নিকা চৌধুরীর ‘কী আছে সেই খামে?’ নাটকে শহীদুজ্জামান সেলিম শিল্পপতি। আমি তাঁর ভালো-মন্দ সব কিছুর সঙ্গে থাকি। এটাও পছন্দের নাটক’-বললেন আজম খান।
ইতিমধ্যে প্রায় সব জেনারেশনের অভিনয়শিল্পীর সঙ্গেই অভিনয় করেছেন। সৈয়দ হাসান ইমাম, শর্মিলী আহমেদ থেকে শুরু করে মাহফুজ আহমেদ, তৌকীর আহমেদ, আফসানা মিমি, আনিসুর রহমান মিলন, জাকিয়া বারী মম, তিশা, সিয়াম, জোভান, মেহজাবিনদের সঙ্গেও অভিনয় করেছেন। এ সবই সম্ভব হয়েছে চয়নিকা চৌধুরীর জন্যই, সে কথা বলতেও ভুললেন না। তবে অভিনয়ে নিজেকে আরো মেলে ধরতে চান, ‘অভিনয় আমার শখ। কখনো ভাবিনি টিভি নাটক করতে পারব। অভিনয় তো করছি। কিন্তু মনের মতো চরিত্র এখনো করতে পেরেছি বলব না। সব ধরনের চরিত্র করতে চাই। চরিত্রে নতুনত্ব আনতে চাই। নিজের জীবনের সঙ্গে মিল আছে এমন চরিত্রও করতে চাই।’
করপোরেট অফিস আর অভিনয়-দুটি দুই জগৎ। মাঝেমধ্যে অফিস ছুটি নিয়েও অভিনয় করতে হয়। আজম খান বলেন, ‘তবে দুই দিকই ম্যানেজ করতে হয়। অফিসের ক্ষতি যেন না হয় সেদিকে লক্ষ রাখি। আমার মেয়ে অনন্যা সিক্সে পড়ে। অনেক সময় দেখা গেছে, ওর জন্য বরাদ্দ সময়টা অভিনয়ে দিচ্ছি। পরিবারেরও সমর্থন পাই যথেষ্ট। বন্ধু, সহকর্মী, মিডিয়ার সহকর্মীরাও উৎসাহ দেন। অভিনয়শিল্পী সংঘের সদস্যও হলাম সেই অনুপ্রেরণায়। এখন নিয়মিত অভিনয়টা করতে চাই। সিনেমায়ও আগ্রহ আছে।’
দৈনিক কালের কণ্ঠ, ১৬ নভেম্বর ২০১৭
Published on: Thursday, 10 January 2019, 03:12 am ▪ Last update: Sunday, 13 January 2019, 04:17 am ▪ Total View of this Page: 1100